• Jeddah
  • Mon - Sat 8:00 - 18:00
Follow Us:

হজ রেজিস্ট্রেশন করার ধাপসমূহ:

হজ হলো ইসলামের পাঁচটি মূল স্তম্ভের একটি এবং এটি একটি বাধ্যতামূলক ধর্মীয় কার্যক্রম যা শারীরিক ও আর্থিকভাবে সক্ষম প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিমের জীবনে কমপক্ষে একবার পালন করতে হয়। হজ পালন করা হয় মক্কায় অবস্থিত কাবা শরীফের উদ্দেশ্যে, যা ইসলামের সবচেয়ে পবিত্র স্থান। 

হজের সময় নির্দিষ্ট ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন করা হয়, যার মধ্যে আরাফাতের ময়দানে অবস্থান, মিনা ও মুজদালিফায় রাত যাপন, এবং শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করা অন্তর্ভুক্ত। 

প্রতি বছর, হিজরি ক্যালেন্ডারের ১২তম মাস জিলহজের ৮ থেকে ১২ তারিখ পর্যন্ত হজ অনুষ্ঠিত হয়।

হজ রেজিস্ট্রেশন করার ধাপসমূহ:

 ১. সরকারি বা অনুমোদিত হজ এজেন্সি নির্বাচন:

প্রথমে আপনার দেশের হজ মন্ত্রণালয় বা ধর্ম মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুমোদিত হজ এজেন্সি বা ট্যুর অপারেটর নির্বাচন করুন। সরকারি ও বেসরকারি উভয় মাধ্যমেই হজের জন্য নিবন্ধন করা যায়।

 ২. অনলাইন রেজিস্ট্রেশন সাইটে প্রবেশ:

আপনার দেশের ধর্ম মন্ত্রণালয় বা হজ মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যান। বাংলাদেশে, হজের জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে [হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা পোর্টাল](https://www.hajj.gov.bd/) ব্যবহার করা হয়।

 ৩. ব্যক্তিগত তথ্য পূরণ করা:

রেজিস্ট্রেশন ফর্মে আপনার নাম, পাসপোর্ট নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, জন্মতারিখ, এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় ব্যক্তিগত তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে।

 ৪. পাসপোর্ট এবং ছবি আপলোড:

পাসপোর্টের কপি এবং একটি সাম্প্রতিক ছবি আপলোড করতে হবে। পাসপোর্টের মেয়াদ কমপক্ষে হজের পরবর্তী ৬ মাস পর্যন্ত বৈধ থাকতে হবে।

 5. প্যাকেজ এবং এজেন্সি নির্বাচন:

হজের বিভিন্ন প্যাকেজ রয়েছে। আপনি আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী সরকারি বা বেসরকারি প্যাকেজ নির্বাচন করতে পারেন। অনুমোদিত হজ এজেন্সি বা ট্যুর অপারেটর নির্বাচন করতে হবে যারা আপনার হজের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবে।

 ৬. টিকা গ্রহণ:

হজের জন্য বেশ কিছু বাধ্যতামূলক টিকা গ্রহণ করতে হবে, যেমন মেনিনজাইটিস, ইনফ্লুয়েঞ্জা, এবং কোভিড-১৯ টিকা। টিকা গ্রহণের পর আপনার টিকা কার্ড আপলোড করতে হবে।

 ৭. পেমেন্ট করা:

রেজিস্ট্রেশন সম্পূর্ণ করার জন্য পেমেন্ট করতে হবে। রেজিস্ট্রেশন ফি নির্ধারিত ব্যাংকে জমা দিতে হবে, এবং জমার রসিদ ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর সংরক্ষণ করতে হবে।

 ৮. রেজিস্ট্রেশন কনফার্মেশন:

সব তথ্য পূরণ এবং পেমেন্টের পর, রেজিস্ট্রেশন সফলভাবে সম্পন্ন হলে আপনি একটি রেজিস্ট্রেশন নম্বর পাবেন। এ নম্বরটি সংরক্ষণ করুন এবং পরবর্তী আপডেটের জন্য নজর রাখুন।

 ৯. ভিসা এবং ফ্লাইটের প্রস্তুতি:

হজের রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হলে, নির্ধারিত সময়ে হজ ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে এবং ফ্লাইট বুকিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।

এই ধাপগুলো অনুসরণ করে আপনি হজের জন্য নিবন্ধন করতে পারবেন।

হজের জন্য রেজিস্ট্রেশন সফলভাবে সম্পন্ন হলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ আছে, যা আপনাকে হজের প্রস্তুতির জন্য করতে হবে। নিচে রেজিস্ট্রেশন শেষে কী করতে হবে তা ধাপে ধাপে উল্লেখ করা হলো:

 ১. রেজিস্ট্রেশন কনফার্মেশন চেক করা:

– রেজিস্ট্রেশনের পরে আপনাকে একটি কনফার্মেশন নম্বর বা রসিদ দেওয়া হবে। এটি সংরক্ষণ করুন এবং মন্ত্রণালয় বা হজ এজেন্সির পক্ষ থেকে প্রাপ্ত যেকোনো নোটিফিকেশন চেক করতে থাকুন।

 ২. হজের প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করা:

– হজে যাওয়ার আগে সাধারণত ধর্ম মন্ত্রণালয় বা হজ এজেন্সিগুলো হজের বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠান সম্পর্কে প্রশিক্ষণ প্রদান করে। এই প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এখানে হজের নিয়মকানুন, ইহরাম গ্রহণ, তাওয়াফ, সাঈ এবং অন্যান্য আচার-অনুষ্ঠান সম্পর্কে বিশদভাবে আলোচনা করা হয়।

 ৩. পাসপোর্ট এবং ভিসা প্রস্তুত রাখা:

– রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হলে আপনার হজ ভিসার জন্য এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। পাসপোর্টের মেয়াদ অন্তত হজের পরবর্তী ৬ মাস পর্যন্ত থাকতে হবে। সময়মতো পাসপোর্ট জমা দিন এবং ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টেশনের ব্যবস্থা করুন।

 ৪. টিকাদান সনদ সংগ্রহ করা:

– হজের জন্য বাধ্যতামূলক কিছু টিকা গ্রহণ করতে হবে, যেমন: মেনিনজাইটিস, ইনফ্লুয়েঞ্জা, এবং কোভিড-১৯ টিকা। এই টিকাগুলো নিয়ে সনদ সংগ্রহ করতে হবে এবং এজেন্সি বা মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে। 

 ৫. ফ্লাইটের প্রস্তুতি নেওয়া:

– রেজিস্ট্রেশন এবং ভিসা পাওয়ার পর, আপনার হজ ফ্লাইটের সময়সূচি সম্পর্কে নিশ্চিত হন। সময়মতো ফ্লাইট বুকিং করুন এবং ফ্লাইটের সময়সূচি ভালোভাবে জেনে নিন।

 ৬. প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সংগ্রহ:

– হজে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যক্তিগত জিনিসপত্র এবং ইবাদতের উপকরণ, যেমন ইহরামের পোশাক, কোরআন শরীফ, দোয়ার বই ইত্যাদি প্রস্তুত করুন। এছাড়া, স্বাস্থ্যকর খাবার এবং ওষুধপত্রও সঙ্গে নিতে হবে।

 ৭. আর্থিক লেনদেন সম্পূর্ণ করা:

– হজে যাত্রার পূর্বে আপনার সব আর্থিক লেনদেন সম্পূর্ণ করুন। যেমন, যদি আপনি হজের জন্য কোনো এজেন্সির মাধ্যমে যাচ্ছেন, তাহলে তাদের সকল ফি এবং অন্যান্য খরচ পরিশোধ করতে হবে।

 ৮. নিরাপত্তা এবং অন্যান্য কাগজপত্র নিশ্চিত করা:

– আপনার হজ ভিসা, পাসপোর্ট, এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সবসময় আপনার কাছে রাখুন। হজের সময় এগুলো আপনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র হবে।

 ৯. পরিবার ও আত্মীয়স্বজনকে অবগত করা:

– হজে যাওয়ার আগে আপনার পরিবার, আত্মীয়স্বজন এবং বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। তাদেরকে আপনার যাত্রা সম্পর্কে জানিয়ে দিন এবং তাদের কাছে দোয়া প্রার্থনা করুন।

 ১০. আত্মিক প্রস্তুতি নেওয়া:

– হজ একটি আত্মিক এবং শারীরিক যাত্রা। তাই রেজিস্ট্রেশন শেষ করে আত্মিকভাবে হজের জন্য প্রস্তুত হওয়া জরুরি। আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে বেশি বেশি ইবাদত, দোয়া ও কোরআন তেলাওয়াত করুন এবং সকল গুনাহ থেকে নিজেকে শুদ্ধ রাখার চেষ্টা করুন।

এই প্রস্তুতিগুলো সম্পন্ন করার পর, আপনি হজের জন্য প্রস্তুত থাকবেন এবং আল্লাহর ইচ্ছায় হজের আচার-অনুষ্ঠান সঠিকভাবে পালন করতে পারবেন।

Share This:

Leave Your Comments

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© Copyright 2024, Made with Love by Noor Softs

Open chat
Hello,
I want to know more!